মযহারুল ইসলাম তালগাছী আবু ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৫ সালে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৪৭ সালে সিরাজগঞ্জ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। এরপর রাজশাহী সরকারি কলেজে বাংলা বিষয়ে অনার্স নিয়ে বিএ ক্লাশে ভর্তি হন। ১৯৪৯ সালে অনার্স পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলা এম.এ প্রিভিয়াস পরীক্ষায় এবং ১৯৫১ সালে অনুষ্ঠিত এম এ ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন। একই সঙ্গে তিনি স্বর্ণ পদক এবং কালীনারায়ণ বৃত্তি লাভ করেন।
তিনি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র তত্ত্বাবধানে ১৯৫৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে "মধ্যযুগের বাংলা কাব্যে হেয়াত মামুদ" বিষয়ে পিএইচ.ডি সম্পন্ন করেন। পরে ১৯৬৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকাচারবিদ্যায় দ্বিতীয় পিএইচ.ডি সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন
মযহারুল ইসলাম ১৯৫২ সালে প্রভাষক হিসেবে ঢাকা কলেজে যোগদান করেন, ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে সিনিয়র প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র ইচ্ছা অনুসারে ঢাবির বাংলা বিভাগ ছেড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক হিসেবে যোগদানকরেন। ১৯৬৩ সালে তিনি আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি রাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি কলা অনুষদের ডীন নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। হার্ভার্ডের মেয়াদ শেষ হবার পর তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি এ্যাট বার্কলীতে কিছুদিন অতিথি অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মযহারুল ইসলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রতিদিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাহসী ও বলিষ্ঠ বক্তব্য উপস্থাপন করতেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর মযহারুল ইসলাম ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালের ১৯ আগস্ট তারিখে মযহারুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে যোগদান করেন। ১৯৭৯-১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়, তামিলনাড়র– আল্লামনাই বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লীর নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি স্প্যারো এ্যাপারেলস্ লিমিটেড নামে পোশাক শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করেন ও আজীবন এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।