তাঞ্জানীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক, বর্তমানে ব্রিটিশ নাগরিক। জন্ম ১৯৪৮ সালের ২০শে ডিসেম্বর, সুলতানি আমলের জাঞ্জিবারে। জাঞ্জিবারে অভ্যুত্থানের সময়, ১৯৬৮ সালে ১৮ বছর বয়সে শরণার্থী হিসাবে ইংল্যান্ড চলে যান। জাঞ্জিবার পরে তাঞ্জানিয়ার অংশ হয়ে যায়। ইংল্যান্ড যাওয়া প্রসঙ্গে গুরনাহ বলেন, “আমার ইংল্যান্ড আসার বিষয়টিকে ‘অ্যাসাইলাম-সিকার’ জাতীয় শব্দ দিয়ে বোঝানো যাবে না। এমন একটা সময় এসেছিলাম, যখন সবাই সেই আতংকের রাজ্য ছাড়তে ব্যস্ত।” গুরনারহ’র পূর্বপুরুষ আরব। তাঁর পিতা ছিলেন ব্যবসায়ী। ইয়েমেন থেকে তিনিও ইংল্যান্ড চলে গিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডে আবদুলরাজাক প্রথমে ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে পড়াশুনা শুরু করেন। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ¯œাতক এবং ইউনিভার্সিটি অব কেন্ট থেকে পিএইচডি অর্জন করেন।
গুরনাহ’র কর্মজীবন শুরু ১৯৮০ সালে নাইজেরিয়ার বায়েরো ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসাবে। তিন বছর পর ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে ইউনিভার্সিটি অব কেন্টে ইংরেজি ও ঔপনিবেশিকোত্তর সাহিত্য বিষয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। ২০১৭ সালে অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালান করেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি উপন্যাস লিখতে আরম্ভ করেন গুরনাহ। মাতৃভাষা সোয়াহিলি হলেও ইংরেজিতে লেখালেখি করেন। যদিও তাঁর লেখায় পূর্ব আফ্রিকার উপকূলীয় এলাকার জীবনধারা প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি বলেছেন, “আমার কল্পনা, আমার মনজগতÑ আমার জন্মভূমির স্মৃতিতে সতত আপ্লুত। এমনকি, অন্য এলাকার গল্প বলতে চাইলেও অজানতে আমার জন্মভূমির ছায়া পড়ে তাতে।”
গুরনাহ’র লেখা ‘প্যারাডাইস’ উপন্যাসখানি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৪ সালে। এর কাহিনীর পটভূমি তাঞ্জানিয়া। এটি বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিল। এছাড়া হুইটব্রেড পুরস্কারের জন্যও মনোনয়ন পায়। তাঁর উপন্যাসগুলির মধ্যে ‘প্যারাডাইস’ সবচেয়ে আলোচিত এবং প্রশংসিত। ২০২১ সালের ৭ই অক্টোবর তাঁকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।