গ্রীষ্মের ছুটিতে দাপাদাপি করে যে নদীর কাছে ভয়াবহ ঋণগ্রস্ত তাঁর নাম ‘মারে ডার্লিং’| জীবনের সবচেয়ে সুন্দরতম সকাল আর সন্ধ্যাগুলো কেটেছে আটলান্টিকের পাড়ে| গন্তব্যহীন একা একা হাঁটতে শিখেছি টেমস নদীর পাড় ঘেঁষে|
অথচ, মেঘনার তীরে, ছায়া ঘেরা পাখি ডাকা নীড় এ প্রথম চোখ মেলেছি পৃথিবী নামক গ্রহে| ভোরের জাহাজ যেমন কুয়াশা ভেদ করে কিছুটা দ্বিধা নিয়ে সামনে এগোয়— ধীরে ধীরে বহে , মেঘনার চিরচেনা সেই ঢেউয়েরা তাঁর সন্তানদের পাল তুলে নিয়ে যায় অজানায়—কখনো সৃষ্টির পথে; কখনো সৃষ্টির শেষে|
গায়ের বর্ণ আমার পাউডার মাখা; সুবিধা যত, অসুবিধা তার চেয়ে বেশি| প্রিয়তমেশুরা আমারে বাসে ভালো, নাকি পাউদার বর্ণের কাছে হয়েছে ধরাশায়ী, সেকালের খঙ্কার কবিরাজ কেউ তা বের করতে পারে নাই; একালের মনোবিগ্যানীর একাধিক ডিগ্রী যতটা আশা জাগানিয়া, এইসব বিষয়ে পারফরম্যান্স ততটাই আশা ডুবানিয়া|
বিলেত থেকে উচ্চশিক্ষিত, অস্ট্রেলিয়া থেকে মধ্য শিক্ষিত —পশ্চিমা প্রভুদের কাছ থেকে এইসব সীল সপ্পর কেনাকাটা করেও আমার শান্তি হল না| আই মীন, জাত আর হল না| সিডনীর অপেরা হাউসের সামনে ছবি, নিউ ইয়র্কের স্ট্যাচু অব লিবার্টির সামনে সেলফি, লন্ডনের খুলে যাওয়া ব্রিজ দেখেও (হাজারটা ছবি সহ) নিজের মনের জাতে উঠতে পারি নাই|
সেবার বছর চারেক আগে হাজির হয়েছিলাম ‘শাশুড়িপুরাণ’ নামের উপন্যাস নিয়ে; সেই প্রথম মনে হয়েছিল-কিছু একটা করেছি, জাতে ওঠার চেষ্টা নিরন্তর যদিও|
লেখকের জাতে ওঠার অবিরাম চেষ্টায় যারা আমাকে হাত বাড়িয়েছেন, তাঁরা আমার পাঠক, আমার সম্পদ; তাঁদের আশীর্বাদ এনে দিয়েছে সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১৩ (প্রথম উপন্যাস-শাশুড়িপুরাণ), ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয় আন্তঃ শিখ্যা ও সাংস্কৃতিক পুরষ্কার (কবিতা—পূজারীর ধর্ম) ২০০২ , মুক্তকণ্ঠ দুরন্ত শিশু কিশোর সাহিত্য পুরস্কার ১৯৯৮ (প্রথম গল্প— পিঠার খোঁজে ), ১৯৯৯ (দ্বিতীয় গল্প— টেলিফোন)|